দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ করোনা মহামারিতে দেশের সমুদ্রবন্দর ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি এক তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। আমদানির চিত্রও একই রকম।
এদিকে আন্তর্জাতিক রুটে নিয়মিত ফ্লাইট সীমিত হওয়ায় বেড়ে গেছে উড়োজাহাজে পণ্য পরিবহনের ভাড়া। ব্যবসা না থাকায় আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত ৩০ শতাংশ কাস্টমস এজেন্টের কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন ৪০ শতাংশ কর্মী।
করোনায় আঘাতে বিপর্যস্ত আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। বৈশ্বিক মন্দায় পাট ছাড়া প্রধান রপ্তানি খাত, তৈরি পোশাক, চামড়া, প্লাস্টিক, সিরামিক, ওষুধ রপ্তানিতে ধস নেমেছে। জুন পর্যন্ত ছয় মাসে শুধু চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গেল বছরের চেয়ে প্রায় নয় লাখ মেট্রিক টন পণ্য কম রপ্তানি হয়েছে। একই চিত্র শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। ৬ মাসে গেল বছরের চেয়ে প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার মেট্রিক টন পণ্য কম রপ্তানি হয়েছে। তবে জুনে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
বাংলাদেশ ফ্রেইটফরওয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ টন কার্গো পণ্য যেতে। কিন্তু এই মহামারির কারণে সেটা ৩০ টন পর্যন্ত ছিলো। এখন প্রায় ৩০০ টন পর্যন্ত যাচ্ছে। আমাদের ক্রেতারা আসতে আসতে ফিরতে শুরু করেছে।
নেতিবাচক ধারা আমদানিতেও। বছরের প্রথম ৬ মাসে শুধু চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গত বছরের চেয়ে সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন এবং শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন শুল্ককর যোগ্য পণ্য কম আমদানি হয়েছে। আয় না থাকায় অনেক সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করেছে। এদিকে পণ্য পরিবহনের অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো।
ঢাকা কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম স্বপন বলেন, অনেকে মালিকের কোনো কাজ নেই। এজন্য অনেকের চাকরি চলে গেছে। এখন সপ্তাহে একটা দুইটা ফ্লাইট চলে, সেখানে প্রতিটা শিডিউলে যে মাল আসার কথা সে মালও আসতেছে না।
গেল চার মাসে কাস্টম হাউসগুলোর রাজস্ব আয় কমে গেছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসেই রাজস্ব আহরণে ঘাটতি ১১ হাজার কোটি টাকা। ঢাকা কাস্টম হাউসে ১১০০ কোটি টাকা।
ঢাকা কাস্টম কমিশনার হাউস মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এই মহামারি যদি না হতো। তাহলে আমাদের যে প্রজেকশন ছিলো সেটার প্রবৃদ্ধি হতো ২০ শতাংশ। এর মানে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায় হতো। এখন দেখা যাচ্ছে, ৩ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরিত হবে।
এনবিআরের হিসাবে চলতি অর্থ বছরের মে পর্যন্ত ১১ মাসে গেল বছরের চেয়ে ২১ হাজার কোটি টাকার শুল্ক করযোগ্য পণ্য কম আমদানি হয়েছে। করোনা মহামারিতে শুধু মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চার মাসে ১৬ হাজার কোটি টাকার কম পণ্য আমদানি হয়েছে।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন